Home Education Info প্রবাদ বাক্য তালিকা ব্যাখ্যাসহ

প্রবাদ বাক্য তালিকা ব্যাখ্যাসহ

ব্যাখ্যাসহ প্রবাদ বাক্য probad bakko bangla
ব্যাখ্যাসহ প্রবাদ বাক্য probad bakko bangla
PDF Download করতে টেলিগ্রাম গ্রুপে জয়েন করুন

Contact us If any query
2digitalhelp@gmail.com

বাংলা লোকসাহিত্যের এক অতুলনীয় সম্পদ প্রবাদ বাক্য । এর মাধ্যমে নিগুড় সত্য বা বাস্তবতা উঠে আসে। এটি মানুষের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার ফসল থেকে ধীরে ধীরে প্রয়োগের ফলে এক সময় সমাজে মিশে যায় বা প্রচলন হয়।আর এভাবেই এক সময় প্রতিনিয়ত ব্যবহারের প্রথা চালু হয়। বাঙালি জাতির হাজার বছরের অধিক সময়ের সংস্কৃতিতে প্রবাদ-প্রবচন/ প্রবাদ বাক্য একটি সমৃদ্ধ ধারা হিসেবে চলে আসছে। প্রবাদ-প্রবচন প্রায় একই অর্থে প্রয়োগ করলেও এই দুটির মধ্যে সামান্য কিছু ভিন্নতা রয়েছে।প্রবাদ হল মানুষের অভিজ্ঞতার ফসল থেকে উদ্ভূত এক ধরনের নিগূড় সত্য যা বিদ্রুপাত্নক উক্তির মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়ে থাকে। এর কোন একক রচয়িতা খুজে পাওয়া যাবে না।কিন্তু প্রবচন হল সমাজের সৃষ্টিশীল এবং প্রজ্ঞাবান মানুষের অভিজ্ঞতালদ্ধ কিছু উক্তি যা ব্যবহার করতে করতে এক সময় জনসমাজে মিশে যায়। নিচে আমরা প্রবাদ বাক্য তালিকা প্রস্তুত করেছি যা বিগত সালের প্রশ্ন বিশ্লেষণ করে তৈরি করা হয়েছে । বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অবশ্যই এখান থেকে কমন থাকবে।

প্রবাদ-প্রবচন কাকে বলে?

লোক সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ প্রবাদ-প্রবচন। ‘প্রবাদ’ ও ‘প্রবচন’ প্রায় একই অর্থ বহন করে। প্রবাদ হচ্ছে পরম্পরাগত বাক্য, জনশ্রুতি এবং ‘প্রবচন’ হচ্ছে প্রকৃষ্ট বচন, অর্থাৎ বহু প্রচলিত উক্তি। মানুষের দীর্ঘদিনের আচরণ পর্যবেক্ষণ করে ঐ সমাজের কোনো সৃষ্টিশীল ব্যক্তি যে চৌকস অভিব্যক্তি বাণীবদ্ধ করে, তাই কালে কালে প্রবাদে পরিণত হয়। যেমন-বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে। এটির রচয়িতা সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। তিনি তার পালামৌ উপন্যাসে এই উক্তিটি করেছিলেন। এটি হল প্রবচন যার রচয়িতার হদিস পাওয়া যায়। কিন্তু প্রবাদের কোন রচয়িতার হদিস পাওয়া যায় না। কালক্রমে রচয়িতা বিলীন হয়ে যায় কিন্তু তার প্রবাদ থেকে যায় জনসমাজে। যেমন- অতি চালাকের গলায় দড়ি, কয়লা ধুলে ময়লা যায় না ইত্যাদি।

প্রবাদ-প্রবচনের পার্থক্য

  1. প্রবাদ লোকসমাজ বা কালের সৃষ্টি।কিন্তু প্রবচন হল সমাজের সৃজনশীল মানুষের সৃষ্টি যেমন কবি,সাহিত্যিক ইত্যাদি।
  2. প্রবাদের কোন লিখিত রুপ নেই যা শুধু মুখে মুখেই প্রচলিত।কিন্তু প্রবচনের লিখিত রুপ আছে। কারণ সেটা জনসমাজের মানুষের লেখা থেকেই প্রচলন শুরু হয়।কালক্রমে সেটা সবাই মুখে মুখে ব্যবহার করে।
  3. প্রবাদ জনসমাজের অভিজ্ঞতার ফসল বা নির্যাস। কিন্তু প্রবচন কোন একক ব্যক্তির অভিজ্ঞালতালদ্ধ উক্তি।
  4. প্রবাদের ব্যজ্ঞনার্থ আছে কিন্তু প্রবচনের রূপক ধর্ম নেই, বাচ্যার্থ বা সরাসরি অর্থই প্রকাশ করে।
  5. সাধারণত প্রবাদ প্রবচনের চেয়ে ছোট হয়।
আরো দেখুন  বিপরীত শব্দ তালিকা

প্রবাদ বাক্যের বৈশিষ্ট্য

ক. প্রবাদে জাতির দীর্ঘ অভিজ্ঞতা, পরিণত বুদ্ধি এবং লোকমনে প্রচলিত সত্য কথন প্রকাশিত হয়।
খ. প্রবাদের অবয়ব হলো একটি সংক্ষিপ্ত বাক্য ।
গ. উপমা, বক্রোক্তি, বিরোধাভাস প্রভৃতি অলংকারযোগে তা গঠিত হয়।

প্রবাদ বাক্যের শ্রেণীবিভাগ

অর্থ বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে প্রবাদ বাক্যকে নানাভাবে ভাগ করা যায়। যেমন-

  1. সাধারণ অভিজ্ঞতাবাচক : চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে।
  2. নীতিকথামূলক : ধর্মের কল বাতাসে নড়ে।
  3. ইতিকথামূলক : ধান ভানতে শিবের গীত ।
  4. মানবচরিত্র সমালোচনামূলক : গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল ।
  5. সামাজিক রীতিনীতিজ্ঞাপক : মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত।
  6. প্রসিদ্ধ ঘটনামূলক : লাগে টাকা দেবে গৌরী সেন।

প্রবাদ বাক্য

অর্থ

অতি লোভে তাঁতি নষ্ট

বেশি লোভে ক্ষতি

ধর্মের ঢাক আপনি বাজে

পাপ কখনো চাপা থাকে না

অতি দর্পে হত লঙ্কা

অহংকার পতনের মূল

ধর্মের কল বাতাসে নড়ে

অপকর্ম প্রকাশিত হয়ে পড়েই

অতি মেঘে অনাবৃষ্টি

অতি আড়ম্বরে কাজ হয় না

ধরাকে সরা জ্ঞান করা

সকলকে তুচ্ছ ভাবা

অল্পজলের মাছ

নিতান্তই বোকা

ধরি মাছ না ছুঁই পানি

কৌশলে কার্যোদ্ধার

অন্ধকে দর্পণ দেখানো

নির্বোধকে জ্ঞান দান

নাকে তেল দিয়ে ঘুমানো

নিশ্চিত কার্যোদ্ধার

অসারের তর্জন গর্জন সার

গুণহীনের বৃথা আস্ফালন

পাকা ধানে মই দেয়া

বিপুল ক্ষতি করা

ওঝার ব্যাটা বনগরু

পণ্ডিতের মূর্খ পুত্র

কারো পৌষ মাস, কারো সর্বনাশ

কারো সুদিন, কারো দুর্দিন

বামন হয়ে চাঁদে হাত

অসম্ভব কিছু পাওয়ার চেষ্টা

কপাল গুণে গোপাল ঠাকুর

অযোগ্যের ভাগ্যগুণে বড় হওয়া

পাপের ধন প্রায়শ্চিত্তে যায়

অসদুপায়ে অর্জিত ধন নষ্ট হয়

পর্বতের মুষিক প্রসব

বিপুল উদ্যোগে তুচ্ছ অর্জন

কাঁচা বাঁশে ঘুন

অল্প বয়সেই স্বভাব নষ্ট হওয়া

বারো মাস ত্রিশ দিন

প্রতিদিন

বারো মাসে তেরো পার্বণ

উৎসবের আধিক্য

কত ধানে কত চাল

টের পাওয়ানো

খাস তালুকের প্রজা

খুব অনুগত ব্যক্তি

বরের ঘরে পিসী কনের ঘরে মাসী

উভয় কুল রক্ষা করে চলা

খিচুড়ি পাকানো

বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা

গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল

পাওয়ার আগে ভোগের আয়োজন

গন্ধমাদন বয়ে আনা

প্রয়োজনের অতিরিক্ত কিছু আনা

বাঘে গরুতে এক ঘাটে জল খাওয়া

ক্ষমতা প্রদর্শন

বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরো

বাহিরে আড়ম্বর ভিতরে শূন্য

বোঝার উপর শাকের আঁটি

অতিরিক্তের অতিরিক্ত

ঘুঁটে পোড়ে গোবর হাসে

অন্যের কষ্ট দেখে আনন্দ প্রকাশ

বিনা মেঘে বজ্রপাত

আকস্মিক বিপদ

চাল না চুলো ঢেঁকি না কুলো

নিতান্ত নিঃস্ব

বানরের গলায় মুক্তার হার

অপাত্রে উৎকৃষ্ট সামগ্রী দান

জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ

ছোট বড় যাবতীয় কাজ করা

বাজারে কাটা

বিক্রি হওয়া

ঝোপ বুঝে কোপ মারা

সুযোগমত কাজ করা

ভদ্রতার বালাই

সাধারণ সৌজন্যবোধ

টো টো কোম্পানির ম্যানেজার

ভবঘুরে

ঢাক ঢাক গুড় গুড়

গোপন রাখার প্রয়াস

মেঘের ছায়া

অশুভ লক্ষণ

যত দোষ নন্দ ঘোষ

দুর্বলের প্রতি সর্বদা দোষারোপ

শিখণ্ডী খাড়া করা

যার আড়ালে থেকে অন্যায় কাজ করা

তেলে মাথায় তেল দেয়া

যার আছে তাকে আরো দেয়া

দুধ কলা দিয়ে সাপ পোষা

শত্রুকে সযত্নে লালন পালন করা

ধান ভানতে শিবের গীত

অপ্রাসঙ্গিক কথার অবতারণা

সাপও মরে, লাঠিও না ভাঙ্গে

উভয় কুল রক্ষা

হরি ঘোষের গোয়াল

অনেক লোকের কোলাহল

অজার যুদ্ধে আঁটুনি সার

লঘু ফলাফলযুক্ত আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজন

অতি দানে বলির পাতালে হলো ঠাঁই

অন্যের কৌশলে ভোগান্তির শিকার

অতি মন্থনে বিষ ওঠে

কোনো বিষয়ে মাত্রাতিরিক্ত আলোড়ন ক্ষতিকর

অধিক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট

বেশি লোক কাজের বিশৃঙ্খলা ঘটায়

অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করী

স্বল্পজ্ঞান নিয়ে বাড়াবাড়ি মূর্খতার পরিচয়

অন্ধের হাতি দেখা

অল্পজ্ঞান লাভ করে বিজ্ঞের মতো অভিমত

অশ্বত্থামা হত ইতি গজ

কোনো কথা সম্পূর্ণ পরিষ্কার না করে সত্য গোপন

আগ নাংলা যে দিকে যায়, পাছ নাংলা সে দিকে যায়

অন্যের দৃষ্টান্ত অনুসরণ

আসলে মুষল নাই ঢেঁকি ঘরে চাঁদোয়া

বাইরে বাবুগিরি অথচ ভিতরে সারশূন্য

ইটটি মারলে পাটকেলটি খেতে হয়

যেমন কর্ম তেমন ফল

ইল্লত যায়না ধুলে খাসলত যায়না মলে

স্বভাবদোষ হাজার সংশোধনের চেষ্টাতেও দূর হয়না

ঊনো বর্ষায় দুনো শীত

যে বছর কম বৃষ্টি হয়, সে বছরে শীত বেশি পড়ে

কাঁচায় না নোয়ালে বাঁশ, পাকলে করে ঠাস ঠাস

সময়ে কাজে না লাগালে অসময়ে পথে ফেরানো কঠিন

চকচক করলেই সোনা হয় না

চেহারাতে আসল গুণ ধরা পড়ে না

চেনা বামুনের পৈতা লাগে না

মানী ব্যক্তির পরিচয়ের প্রয়োজন পড়ে না

চোরা না শুনে ধর্মের কাহিনী

অসাধুকে উপদেশ দিয়ে সৎ করা যায় না

ঝিকে মেরে বৌকে শেখানো

একজনকে বকা দিয়ে অপরকে শিক্ষা দেয়া

ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দার

যোগ্যতা বা ক্ষমতাহীনের আড়ম্বর

দশচক্রে ভগবান ভূত (ভগবান অর্থ- ঈশ্বর)

দশ জনের চক্রান্তে ন্যায়কে অন্যায় করা

দেবতার বেলা লীলাখেলা, পাপ লিখেছে মানুষের বেলা

সামাজিক বিধি-বিধানের নিষ্ঠুর প্রয়োগ

নাচতে না জানলে উঠোন ভাঙা (বাঁকা)

অকর্মণ্য ব্যক্তি কাজে অসফলতার পর অন্যের দোষ দেয়

নিজের চরকায় তেল দেয়া

অন্যের কাজে মাথা না ঘামিয়ে নিজের কাজে মনোযোগ দেয়া

পরের ধনে পোদ্দারি / পরের মাথায় কাঁঠাল ভাঙ্গা

অন্যের টাকায় বাহাদুরি / পরকে কষ্ট দিয়ে নিজের স্বার্থোদ্ধার

পড়েছি মোগলের হাতে খানা খেতে হবে সাথে

বিপদে পড়ে কাজ করা

পুরানো চাল ভাতে বাড়ে

অভিজ্ঞতা বা প্রবীণত্বের মূল্য বেশি

পান্তা ভাতে ঘি নষ্ট, বাপের বাড়ি ঝি নষ্ট

দরিদ্রের বড়লোক ভাব দেখানো/অপব্যবহার

বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে

জীবমাত্রই স্বাভাবিক অবস্থানে সুন্দর

বিড়ালের ভাগ্যে শিকা ছেঁড়া

ভাগ্যক্রমে বিনা চেষ্টাতে বাঞ্ছিত বস্তু লাভ

বড়র পিরিতি বালির বাঁধ ক্ষণে হাতে দড়ি ক্ষণেকে চাঁদ

উচ্চস্তরের সঙ্গে সম্বন্ধ ক্ষণস্থায়ী

মারের ওপর ওষুধ নাই

সহজভাবে কোনো চেষ্টা ব্যর্থ হলে তার উপর নিষ্ঠুর আচরণ

যদি হয় সুজন, তেঁতুল পাতায় ন জন

মিলেমিশে কাজ করলে অসম্ভবকে সম্ভব করা যায়

যে দামে কেনা সেই দামে বিক্রি

যা কিনতে অর্থ খরচ হয়নি, তা নষ্ট হলে লাভ ক্ষতির হিসাব চলে না

সাত নকলে আসল খাস্তা

নকলের নকলে মূল জিনিস হারিয়ে যায়

হবুচন্দ্র রাজার গবুচন্দ্ৰ মন্ত্ৰী

নির্বোধের পরামর্শে চলা নির্বোধ ব্যক্তি

PDF Download করতে টেলিগ্রাম গ্রুপে জয়েন করুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here